29 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

পুরনো অ্যালবাম: কেমন ছিল ঢাকা?

আপনি যেখানে বসে এই লেখাটা পড়ছেন, তার আশপাশটা কেমন ছিল ১০০ বছর আগে? বিশেষত আমাদের এই প্রিয় ঢাকা মহানগরী? চারপাশটা কি এমন আকাশচুম্বী দালানকোঠা আর ধূলিমলিন বিষণ্ণ ডিজেলের গন্ধেভরা ছিল? চোখবন্ধ করে ঘুরে আসুন ১০০-১৫০ বছর আগে। নিজেকে কল্পনা করুন ঢাকার রাস্তায়। কি দেখছেন? চলুন, মিলিয়ে নিন আপনার কল্পনা আর বাস্তবকে।

আজ আমরা ঢাকার যে ছবিগুলো দেখব সেই ছবিগুলোর কিছু চার্লস ডয়েলের আঁকা ১৮০৮-১৮১১ সালের দিকে। পরবর্তীতে ১৮১৪ এবং ১৮২৭ সালে “The Antiquities of Dacca” নামে চারটি ভলিউম আকারে প্রকাশ পায় ছবিগুলো। ১৯০৪ সালে ভাইসরয় লর্ড কার্জনের এক ফটোগ্রাফার, ফ্রিটজ ক্যাপ ঢাকার আরো কিছু অতি মুল্যবান ছবি তোলেন। কিছু আবার ব্রিটিশ লাইব্রেরির সত্তাধীন।

লালবাগ কেল্লা
লালবাগ কেল্লা মোঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম নিদর্শন। এটা যতটা না সামরিক কাজে ব্যবহৃত হত তার চেয়ে বেশি ব্যবহৃত হত মোঘল নবাবদের বাগানবাড়ি বা অবকাশযাপনকেন্দ্র হিসেবে। ১৬৭৮ সালে সুলতান মোহাম্মদ আজমের শাসনামলে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর তত্ত্বাবধানে লালবাগ কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কথিত আছে যে, ১৬৮৪ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর আদরের কন্যা ইরান-দুখত (পরীবিবি) এর মৃত্যুতে খাঁ প্রচন্ড কষ্ট পান এবং অবিলম্বে এই দুর্গের নির্মাণ বন্ধ করে দেন এবং এর অভ্যন্তরে তিনি পরীবিবির কবর স্থাপন করেন যা পরীবিবির মাজার নামে পরিচিত।

চার্লস ডয়েলের পেইন্টিং। লালবাগ কেল্লার পাশ দিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী প্রবাহমান। ছবিটিতে ১৮৭০ সালে কেল্লার দক্ষিণাংশের একটি ফটক দেখানো হয়েছে; Source: wikipedia.org
অতঃপর ১৯০৪ সালে ফ্রিটজ ক্যাপের ধারণকৃত ছবি; Source: rajuport.typepad.com
পরীবিবির মাজার; Source: rajuport.typepad.com
রমনা পার্ক
পহেলা বৈশাখ মানেই পান্তা ইলিশ আর রমনার বটমূলে বসে বৈশাখী গান শোনা, মাটির পুতুল, কাঁচের চুডির রুমুঝুম। আবার বই মেলা হলে রমনার প্রাঙ্গণ সারা দেশের মানুষের বই তৃষ্ণা মেটায়। কেমন ছিল এখনকার এই সুশোভিত আনন্দউদ্যানটি?
ছবিটি ১৯০১ সালে তোলা। রমনার মুল ফটক; Source: rajuport.typepad.com

চক বাজার
পুরান ঢাকার ইফতারি মানে চক বাজারের ইফতারি। পুরো রমজানে একবার হলেও চক বাজারে ঢুঁ মেরে আসতে হয় নগরবাসীর। হরেক রকমের লোভনীয় খাবারের আখড়া এই চক বাজার। কিন্তু এই চক বাজারেই এক সময় ক্রীতদাস কেনা বেচা হত। মোঘল আমলে এটা ছিল দাস ব্যবসা এবং লোকজনের আড্ডার কেন্দবিন্দু।

১৯০৪ সালে চক বাজার মোড়, বর্তমান নাজিমুদ্দিন সড়ক; Source: wikipedia.org

ঢাকা কলেজ
অনেক ইতিহাসে সাক্ষী এই ঢাকা কলেজ। ১৮৪১ সালে উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এই ঢাকা কলেজ। হিন্দু কলেজের শিক্ষক এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জে. আয়ারল্যান্ড ঢাকা কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ। বর্তমানে ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৯টি বিষয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। ছাত্রদের জন্য ঢাকা কলেজে সাতটি ছাত্রাবাস আছে।

ঢাকেশ্বরী মন্দির
ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নির্মাণশৈলী দেখে ধারণা করা হয় যে এটা পূর্বে একটি বৌদ্ধ মন্দির ছিল। পরবর্তীতে যা রুপান্তরিত হয় হিন্দু মন্দিরে। উনিশ শতকের শেষের দিকে মন্দিরটি সম্পূর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ ছিল এবং রক্ষণবেক্ষন ও উপাসনার জন্য কোন পুরোহিত ছিল না।

মিটফোর্ড হসপিটাল (সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ)
১৮২০ সালে ঢাকা কালেক্টর স্যার রবার্ট মিটফোর্ড বুড়িগঙ্গার তীরে এই হাসপাতালটি তৈরির উদ্যোগ নেন। ঢাকায় কলেরার ব্যাপক মহামারী দেখে তিনি অত্যন্ত ব্যাথিত হন এবং এই মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। মুলত ১৯৬২ সালে এটি মেডিকেল কলেজের রুপ নেয় এবং ঢাকার নবাবদের দানশীলতার প্রতি সম্মান জানিয়ে পরবর্তীতে এর নাম “স্যার সলিমুল্লাহ মেডকেল কলেজ” রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

বিশেষ প্রতিবেদন