রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ নিয়ে দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট যেন তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সেই সঙ্গে এ ধরনের কোনো সংকট কেউ তৈরি করতে চাইলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালেহউদ্দিন আহমেদ।
রাষ্ট্রপতির অপসারণ দাবিতে গতকাল কয়েকটি ব্যানারে বিক্ষোভ হয়। এ নিয়ে রাতে বঙ্গভবনের আশপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা তাঁদের বাধা দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কিছু পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ চালিয়ে আসছি, তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা আলোচনা করছি।’
দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুতের জন্য যে সংস্কার চলছে সে কাজ জোরদার করার জন্য ঐক্যমতের ভিত্তিতে সেইসব সংস্কার দ্রুত করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আলোচনা আমরা করছি।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ যে কষ্ট পাচ্ছে সেটি দূর করার ব্যাপারে সরকারকে আরও কঠোর ও কার্যকর ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম।
দেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসররা নানা কৌশলে নানা ভাবে দেশে রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন লড়াই করে বহু রক্তের বিনিময়ে আমরা যে পরিবর্তন অর্জন করেছি এই পরিবর্তন সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘এখানে সব রাজনৈতিক দল শ্রেণী পেশার সংগঠন ছাত্র-যুব সংগঠন সবার দৃঢ়তর ঐক্য গড়ে তোলা দরকার। যাতে কেউ কোনোভাবে দেশে নতুন করে সাংবিধানিক সংকট কিংবা রাজনৈতিক সংকট তৈরি করতে না পারে এভাবে সবাইকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে।’
সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সেই সংস্কারগুলো করার দাবি তুলে অগ্রাধিকার হিসেবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘জনগণের চলমান সংকটগুলো নিরসন করা। এই আন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসররা যদি কোনো সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক সংকট করার চেষ্টা করে তাহলে গণতন্ত্রকামী ও আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব।’
রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের বিষয়ে সরকারের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্পেসিফিক কোনো ব্যাপার না। আমরা বলেছি, দেশে নতুন কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। যদি কেউ সেটা করতে চায় সেটাকে আমরা সবাই মিলে মোকাবিলা করব।’